বার্মা ও রোহিঙ্গা নিয়ে কিছু কথাঃ একজন নেতার অপেক্ষায়

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে রোহিঙ্গা ইস্যু থেকে এখন সুচি'র নোবেল ফেরতই মূল বিষয় (নানা জনের কাছ থেকে পিটিশনের লিঙ্ক পাচ্ছি, প্রোটেষ্ট করার জন্য)। 
এক জনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম কেন প্রোটেষ্ট করব? ঊত্তর- মুসলিম মারতেছে। 
আচ্ছা নোবেল যেন কারা দেয়? 
নোবেল প্রাইজ তো বিধর্মীদের, ওরা অইটা কারে দিল আর না দিল তাতে আমাদের কি আসে যায়। শান্তির ধর্ম ইসলাম আর ওরা তো এইটাই মানে না, তাইলে ওদের এওয়ার্ড ফেরতদেওয়া নিয়া মাথা ব্যাথা  কেন?

রোহিঙ্গা সবাই যে মুসলমান তা কিন্তু নয় আর এ তথ্যটি অধিকাংশ বাংলাদেশীই জানে না। আমাকে জিজ্ঞেস করতেই পারেন আমি কি করে জানি? আমার সহকর্মী ছিল রোহিঙ্গা (প্রথমে আমি বাংলাদেশী ভেবে ভুল করেছিলাম). আরাকানের ইতিহাস বলে ওখানের অস্থিতিশীলতা মুঘল আমলের আগে থেকেই।       

রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের উপর চাপ আসছে বর্ডার খুলে দেবার জন্য, দেশেও অনেকে বর্ডার খোলার পক্ষে। ভাল কথা, এই চাপটা কেন বার্মা সরকারকে দেওয়া হচ্ছে না। টেকণাফ সীমান্তে অবৈধ সব কারবারে , ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রন রোহিঙ্গাদের হাতে বলেই শুনেছিলাম। 

মালিক সাব দেখলাম বাংলাদেশস্থ বার্মা দুদাবাস ঘেরাও এর প্রস্তাব করেছে, ব্যাপারখানা এমন যেন দুদাবাসেই বার্মার প্রধানমন্ত্রী থাকে ; ঘেরাও করলেই কেল্লা ফতে। 

দেশে আন্দোলন হবে রোহিঙ্গা সমর্থনে কিন্তু তাতে কি হবে? মোড়ল দেশের অনুমতি ছাড়া আমাদের সরকার বিদেশী দেশে হস্তক্ষেপ করবে কোন অধিকারে? সমুদ্রসীমা নিয়েই যেখানে বার্মার সাথে বাজাবাজি সেখানে নতুন ঝামেলায় সরকার জড়াবে না এটাই স্বাভাবিক। সো তাদের সাপোর্ট করতে যেয়ে আমরা যেন নিজ দেশের রাস্তাঘাটে পথচারীদের বিপদে না ফেলি। 

গত বছর তুরুষ্ক থেকে যে যুদ্ধ জাহাজ বার্মার পথে ছিল বলে একমাত্র বাংলার অনলাইন ফুলে ফেপে উঠেছিল কিন্তু সেই যুদ্ধ জাহাজ কই গেল, কই গেল পাকিস্তানের বার্মা উড়িয়ে দেওয়া টাইপের পোষ্ট। (দুই একজন অবশ্য গতবারের গুলো এবারো দিচ্ছে) 

বার্মার অর্থনীতি দ্রুত প্রসার পাচ্ছে , বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছে বহুগুনে। তারা নিশ্চয়ই একটা অস্থিতিশীল দেশে বিনয়োগ করতে চাইবে না যেখানে তাদেরও স্বশরীরে থাকতে হবে। আমার তো মনে হয় এর পিছনে বড় কোন প্লান আছে আরাকানের ভৌগলিক অবস্থাগত কারনে। 


রোহিঙ্গারা কতটা একতাবদ্ধ সেটাই এখন দেখার বিষয় , ট্রু লীডার না থাক একজন সিচুয়েশনাল লীডারের বড় বেশী প্রয়োজন রোহিঙ্গাদের জন্য। যে আলোচনার ডাক দিতে পারবে , জাতিসংঘের নেত্রীবৃন্দের সাথে , বহির্বিশ্বের সাথে। কারন আলোচনা ছাড়া এ সমস্যার সমাধান করতে কেউ এগিয়ে যাবে না , বর্তমান এ ইকোনোমিক ক্রাইসিসে তো প্রশ্নই আসে না। একসময় বার্মার উপর চীনের কিছুটা চাপ ছিল এখন সেটাও দেখা যাচ্ছে না. 

মানুষহত্যা কোন ভাবেই কাম্য নয়, সে যে ধর্মেরই হোক। 


No comments

Theme images by merrymoonmary. Powered by Blogger.