৪৩ বছরের হিসাবঃ গোড়ায় গন্ডগোল; লাহোরের চেয়ে ঢাকার প্রশাসনের ব্যর্থতা বেশী নয় কি?
স্বাধীনতার ৪৩ বছর পেরিয়ে গেছে। অনেক রঙ্গিন স্বপ্নের
জালবুনে সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে যে দেশের জন্ম। যে দেশে হবার কথা ছিল অনেক
কিছু, ছিল অনেক কিছুই পাওয়ার। কিন্তু আজ
এত বছর পরও এদেশের সাধারন জনতার প্রাপ্তির খাতায় তেমন কিছুই নেই।
শাসক আসে শাসক যায়। দিনে দিনে অনেক কিছুই
বদলিয়েছে, শুধু বদলায় নি এদেশের জনগনের অবস্থা। ৪৩ বছর পরে এসে ৪৩ টি ভাল কিছু
পাচ্ছি না যা পাকিস্তান আমলের চেয়ে ভাল।
এ স্বাধীনতা কি মুক্তিযোদ্ধারা চেয়েছিলেন। আজ
কারনে অকারনে মানুষ মরছে, আইনের রক্ষকরা ভক্ষক হয়ে সব গ্রাস করছে অথবা তাদেরকে
ব্যবহার করা হচ্ছে ভক্ষন করতে। যে মুক্তিযুদ্ধ ছিল আপামর জনতার প্রানের দাবি আজ
সেই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ব্যবসা হচ্ছে।
কখনো কখনো মনে হয় দেশের অবস্থা পাকিস্তান
থাকালীনের চেয়ে খারাপ অবস্হায় পৌছে যায়। ক্ষমতার অপব্যবহার, দূর্নীতি, টেন্ডারবাজি
ও অপরাধ মনে হয় না লাহোর কেন্দ্রীক প্রশাসনেও ছিল। ক্ষমতার পালাপদলে দল বদলালেও এ
বিষয়গুলো ঠিকই রয়ে যায় এবং যাচ্ছে।
রাজনীতির জন্যই দেশের রাজনীতি হচ্ছে। এক
সরকারের সময় নেয়া উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ সরকারের বিদায়ের সাথে সাথেই ফাইল বন্দি হয়ে
পরে। এতে করে হচ্ছে সম্পদের অপব্যবহার। আর তাই এখনো দাদুর বয়সি অনেককেই বলতে শুনি
পাকিস্তান আমলই ভালো ছিল।
৪৩ বছর পরেও ৭১এ কে নেতৃত্ব দিয়েছে তা নিয়ে
যে দেশে চলে দলাদলি, মতভেদ সে দেশের উন্নয়ন কিভাবে সম্ভব। জন্মই যেন আজন্ম পাপ। না
হলে এতোদিনে দেশ কতটুকু এগিয়ে গেল, ভবিষ্যতে কিভাবে এগোবে সেই সকল ঘঠনমূলক
চিন্তাধারা বাদ দিয়ে আমরা পারতাম না সেই পুরনোকে আকরে থাকতে। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে
হয় তাই বলে এই নয় যে বছরভরে শুধু ভাঙ্গা ইতিহাসই বাজিয়ে যাব।
দেশের দুই প্রধান দলের প্রধান নেতা-নেত্রীদের
এমন কোন বক্তব্য, ভাষন পাবেন না যেখানে পুরনো ইতিহাস নিয়ে টানাটানি না করছে।
অবস্থা এমন যে স্বাধীনতার পর জন্ম নেওয়া নেতারাও নতুন নতুন ইতিহাস বলে, তাও মুক্তিযুদ্ধের
ইতিহাস। দুই নেত্রী একে অপরকে তাদের মুখ দেখাতে লজ্জাবোধ করে।
এদের টক শো ভরে থাকা সেই ১৯৭১ই, তাদের
ব্যক্তব্যে ভবিষ্যতের পরিকল্পনার কথা থাকে নাই বললেই চলে। কারন উদর পূর্তি করতে
করতেই বেলা শেষ।
যতদিন না আমরা ১৯৭১ এর সঠিক নিষ্পত্তি করতে
পারছি অথবা মুক্তিযোদ্ধের ঘোর থেকে বেরিয়ে আস্তে পারছি ততদিন দেশের উন্নয়ন
কোনভাবেই সম্ভব নয়। সমসাময়িক কালে স্বাধীনতা প্রাপ্ত অনেক দেশই বাংলাদেশকে পেছনে
ফেলে অনেক এগিয়ে গেছে। আমরা সেই আধারেই রয়ে গেলাম। দেখুন ৬২ তে সিঙ্গাপুর - ১৯৬২ তে সিঙ্গাপুর
আর এখন সিঙ্গাপুরের অবস্থা কি তা তো সবাই জানেই।
আর এখন সিঙ্গাপুরের অবস্থা কি তা তো সবাই জানেই।
স্বাধীনতা যুদ্ধ হোক একটি চেতনার নাম, আমার
পূর্বপুরুষ কি করে গেছে তার কথা বলা কিছুটা কমিয়ে আমি ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য কি
করে যাচ্ছি তা নিয়ে যেন কথা বলি। পুরনো কথায় আর পেট ভরছে না। দেশের কান্ডারিদের চিন্তায়,
চেতনায় আসুক নবালোকের রশ্মি।
বেলা শেষে যেন বলতে পারি – হে মুক্তিযোদ্ধাগন
আপনারা আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন, আমরা দিয়ে গেলাম উন্নতি, সমৃদ্ধি আর শান্তি। সোনার
বাংলার সুফল পৌছে যাক প্রতিটি ঘরে ঘরে। সার্থকতা পাক স্বাধিকার আন্দোলন,
স্বাধীনতাযুদ্ধ; গৌরবের মুক্তিযুদ্ধ। শান্তিপাক প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার আত্মা। -
আমিন।
No comments