জীবিতকে মৃত : কপি পেষ্ট আর কত ?



প্রযুক্তি মানুষের জীবনে চরম স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে এসেছে. সেই জাদুর কাঠির ছোয়া সবচেয়ে বেশি লেগেছে তথ্য আদানপ্রদানের মাধ্যম গুলোতে. নানা ধরণের অ্যাপস তাকে আরোও ত্বরান্বিত করেছে. তবে সচেতন বা অবচেতন প্রসূত অপব্যবহার বা ভুল ব্যবহারও নেহায়েতও কম নয় . আর এ কাজটি সবচেয়ে বেশি হচ্ছে "কপি এবং পেষ্ট" এর কারণে . কয়েকটি উদাহরণ দিচ্ছি ..

সিঙ্গাপুরের কর্মক্ষেত্রে ইমার্জেন্সি ড্রিল (জরুরিঅবস্থার মহড়া) একটি সাধারণ ব্যাপার যা কর্মীদের জরুরি অবস্থায় করণীয় কি তা বাতলে দেবার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়. কখনো কখনো মানুষাকৃতি বস্তু আবার কখনো কখনো মানুষকেই ইমার্জেন্সি ড্রিলএ আহত হিসেবে ব্যবহৃত হয়. একজন আবুল ভদ্রলোক  ড্রিলে ব্যবহৃত একজন লোকের ছবি না বুঝেই সত্যি মনে করে কপি করে অন্য এক গ্ৰুপে পেষ্ট করে . সেখান থেকে সে বার্তা পৌঁছে যায় তার পরিজনের কাছে দেশে আর সাথে ছবি প্রমান করে লোকটি আসলেই আহত . এবার বুঝতেই পারছেন ওই পরিবারের কি অবস্থা .


আর একটা বলি, কিছুদিন পরপরই দেখি আমাকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্ৰুপে কে বা কাহারা বিনা অনুমতিতে যুক্ত করছে আবার হঠাৎ হঠাৎ বেরও করে দিচ্ছে (এই যুক্ত বা বিযুক্তের কারণ জানতে চাইলে জবাব মেলে কদাচিৎ). আসল কথায় আসি, তো একজন গ্ৰুপে অন্য একজনের অসুস্থরোগ্যের জন্য ছবিসহ পোস্ট করে দু'আ চাইলো. প্রথম দিকে কয়েকজন আমিন আমিন লিখলো. এর পর একজন "ইন্নালিল্লাহ ..... রাজিউন" লিখলো . পরের কয়েকজন সেই  ইন্নালিল্লাহ ..... রাজিউন কপি করে সাথে আরো কিছু যোগ করে পোস্ট করা শুরু করলো. কেউ কেউ তাকে জান্নাতে যাবার প্রার্থনাও করলো ....

জীবিত ব্যক্তিকে এভাবে মৃত বানানো বা পরিবারের দুশ্চিন্তার জন্য না বুঝে কপি পেষ্টই অনেকাংশে দায়ী. অনেকে একই জিনিস বিভিন্ন গ্ৰুপে (গ্রূপগুলোর সদস্য মোটামুটি একই শুধু নাম ভিন্ন) পোস্ট করে যা বিরিক্তিকর বটে.


আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় আমার লিখা কোন পোস্টই কেউ একজন আমাকে ইনবক্সে শেয়ার করছে পেজে পোস্ট করার জন্য. এখনতো আবুলমার্কা অনলাইন পত্রিকাগুলো বিনাঅনুমতিতে শুধু কপিপেষ্ট করে পোস্টই করে না , অন্যের লিখা নিজ নামে চালিয়ে দেয় যা চুরির সমতুল্য. এর পিছনে হেতু কি তা এখনো অজানা.

ফেসবুকের কপিপেষ্ট নিয়ে নতুন করে বলতে গেলে হিরো আলম আমায় ছাড়বে না.

তাই কপিপেষ্ট ওয়ালাদের বলবো - জেনে বুঝে কপিপেষ্ট এবং পোস্ট করুন , অন্যের পোস্ট নিজ নামে চালানো বন্ধ করুন. মাথা তো আপনার ঘাড়েও আছে , খাটান না কেন ?

No comments

Theme images by merrymoonmary. Powered by Blogger.